উত্তরঃ
পরিচিতি ও ভূমিকাঃ আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল-
কিন্দি ( আরবি: ﺃﺑﻮ ﻳﻮﺳﻒ ﻳﻌﻘﻮﺏ ﺑﻦ ﺇﺳﺤﺎﻕ
ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ) ( ৮০১ - ৮৭৩ ) প্রখ্যাত আরব
পণ্ডিত। আল-কিন্দি "কিন্দা" গোষ্ঠীর লোক।
তার জন্ম কুফা নগরীতে এবং এখানেই
শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেছেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য বাগদাদ যান। পাশ্চাত্য
বিশ্বে তিনি লাতিনিকৃত
"আলকিন্ডাস" (Alkindus) নামে পরিচিত।
তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক,
বিজ্ঞানী, জ্যোতিষী,
জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্ত্ববিদ,
রসায়নবিদ, যুক্তিবিদ, গণিতজ্ঞ,
সঙ্গীতজ্ঞ, পদার্থবিজ্ঞানী,
মনোবিজ্ঞানী এবং আবহবিজ্ঞানী।
মুসলিম পেরিপ্যাটেটিক দার্শনিকদের
মধ্যে তিনিই প্রথম। তাই
তাকে মুসলিম পেরিপ্যাটেটিক
দর্শনের জনক বলা যায়।
মুসলমানদের দার্শনিক বলার কারনঃ
তার অনেক
অর্জনের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য
ছিল গ্রিক এবং হেলেনীয় দর্শনকে
আরব জগতে পরিচিত করে তোলা।
এছাড়া বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখায়
তিনি অগ্রদূতের ভূমিকা পালন
করেছেন।
আল-কিন্দি কিন্দা গোষ্ঠীর লোক।
তার জন্ম কুফা নগরীতে এবং এখানেই
শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেছেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য বাগদাদ যান।
বাইতুল হিকমায় তার বিশেষ গুরুত্ব
ছিল। আব্বাসীয় বংশের
খলিফারা তাকে গ্রিক বিজ্ঞান ও
দর্শন গ্রন্থসমূহ আরবিতে অনুবাদের
দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মুসলিমরা এই
গ্রিক ও হেলেনীয় দর্শনকে "প্রাচীনের
দর্শন" নামে অভিহিত করতো।
প্রাচীনের দর্শন
নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে আল-
কিন্দি নিজস্ব দার্শনিক ও
বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রতিষ্ঠিত করেন।
এই জ্ঞানই
তাকে ইসলামী নীতিবিদ্যা থেকে অধ
িবিদ্যা এবং ইসলামী গণিত
থেকে ঔষধবিজ্ঞানের মত গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে মৌলিক গ্রন্থ ও ভাষ্য রচনায়
অনুপ্রাণিত করেছিল।
আল-কিন্দিই প্রথম ভারতীয়
সংখ্যা পদ্ধতিকে মুসলিম ও খ্রিস্টান
বিশ্বে পরিচিত করে তোলেন।
ক্রিপ্টোলজি ও
ক্রিপ্ট্যানালাইসিসে তার বিশেষ
আগ্রহ ছিল, গুপ্ত সংকেতের মর্ম
উদ্ধারের জন্য কয়েকটি নতুন গাণিতিক
পদ্ধতিও আবিষ্কার করেছিলেন যার
মধ্যে কম্পাঙ্ক বিশ্লেষণ
পদ্ধতি উল্লেখয়োগ্য। গণিত ও
চিকিৎসাবিজ্ঞানের
জ্ঞানকে ব্যবহার করে ডাক্তারদের
জন্য একটি স্কেল নির্ধারণ
করেছিলেন। এই স্কেল
দিয়ে ডাক্তাররা তাদের প্রস্তাবিত
ঔষুধের কার্যকারিতা পরিমাপ
করতে পারতো। এছাড়া তিনিই প্রথম
সঙ্গীত থেরাপি
পরীক্ষা করে দেখেছিলেন।
আল-কিন্দির দর্শনের প্রধান বিষয় চিল
মূলধারার ইসলামী ধর্মতত্ত্বের
সাথে সার সংযোগ। অনেক
ইসলামী চিন্তাবিদের মত তিনিও
ধর্মতত্ত্বের সাথে দর্শনের সম্পর্ক
নির্ণয়ের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্দির
অনেক রচনাতেই ধর্মতত্ত্বের মৌলিক
বিষয়ের দেখা মিলে। যেমন, আল্লাহ্র
প্রকৃতি, আত্মা এবং ভবিষ্যদ্বাণী।
মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের কাছে দর্শনের
গুরুত্ব তুলে ধরার ক্ষেত্রে তার কাজ
যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার নিজস্ব
দার্শনিক চিন্তায় মৌলিকত্ব খুব
বেশি ছিল না। আল-ফারাবি নামক
আরেকজন মুসলিম দার্শনিকের মতবাদ
তার দার্শনিক ধারাকে অনেকটাই
ম্লান করে দিয়েছে। তার উপর বর্তমান
যুগে পরীক্ষা করার মত তার খুব কম
লেখাই অবশিষ্ট আছে। তার পরও
কিন্দিকে আরব ইতিহাসের অন্যতম
সেরা দার্শনিকের মর্যাদা দেয়া হয়।
আর এ কারণেই
তাকে অনেকে সরাসরি "দ্য আরব
ফিলোসফার" নামে ডাকেন।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
No comments:
Post a Comment