স্বাগতম

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতমসৈয়দ আহম্মদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সবগুলো বিভাগের মধ্যে আমরা প্রথমবারের মত নিজেস্ব সাইট ওপেন করেছিএখন থেকে ই/ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সকল শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ বাড়িতে বসে বিভাগের এবং কলেজের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে বলে আমরা মনে করি সেই সাথে তথ্য ও প্রযুক্তিতে আমাদের এ উদ্যোগ অন্য সব বিভাগের কাছে একটা মাইল ফলক হিসেবে পরিগনিত হবে এবং অন্যরাও এ বিষয়ে আগ্রহী হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস

এই উদ্যোগ কে সফল করতে আমাদের বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন অত্র বিভাগের মাননীয় বিভাগীয় প্রধান জনাব মোঃ আবু হাম্মদ বাকি বিল্লাহ স্যার, প্রভাষক জনাব মোঃ মঞ্জুরে আলম রাসেল স্যার, জনাবা আয়শা সিদ্দিকা এবং যিনি আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রেরণা এবং সর্বদা পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন তিনি হলেন জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম স্যারআমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সাথে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি

এছাড়া আমাদের প্রিয় সহপাঠী মেহেরুল ইসলাম,রায়হান হাবিব,ফিরোজ সরকার,তানিয়া আক্তার সহ সকলকে আমাদের পাশে থাকার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি

আশা করি আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস সৈয়দ আহম্মদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী সহ অন্যান্য কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী দের উপকারে আসবে

সব শেষে আমাদের ওয়েব সাইট এ আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

ধন্যবাদান্তে

এস এম হারুন অর রশিদ

উদ্যোক্তা ও সাইট ডেভেলপার

নোটিস

২য় বর্ষ নির্বাচনী পরীক্ষার নোটিশ

সৈয়দ আহম্মদ বিশ্ববিদ্যালয় এর সন্মান ২য় বর্ষের নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে।
সকলকে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার জন্য বলা হলো।

Saturday, 21 February 2015

আল কিন্দী

আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল-
কিন্দি ( আরবি: ﺃﺑﻮ ﻳﻮﺳﻒ ﻳﻌﻘﻮﺏ ﺑﻦ ﺇﺳﺤﺎﻕ
ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ) ( ৮০১ - ৮৭৩ )

প্রখ্যাত আরব
পণ্ডিত। পাশ্চাত্য
বিশ্বে তিনি লাতিনিকৃত
"আলকিন্ডাস" (Alkindus) নামে পরিচিত।
তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক,
বিজ্ঞানী, জ্যোতিষী,
জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্ত্ববিদ,
রসায়নবিদ, যুক্তিবিদ, গণিতজ্ঞ,
সঙ্গীতজ্ঞ, পদার্থবিজ্ঞানী,
মনোবিজ্ঞানী এবং আবহবিজ্ঞানী।
মুসলিম পেরিপ্যাটেটিক দার্শনিকদের
মধ্যে তিনিই প্রথম। তাই
তাকে মুসলিম পেরিপ্যাটেটিক
দর্শনের জনক বলা যায়। তার অনেক
অর্জনের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য
ছিল গ্রিক এবং হেলেনীয় দর্শনকে
আরব জগতে পরিচিত করে তোলা।
এছাড়া বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখায়
তিনি অগ্রদূতের ভূমিকা পালন
করেছেন।
আল-কিন্দি কিন্দা গোষ্ঠীর লোক।
তার জন্ম কুফা নগরীতে এবং এখানেই
শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেছেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য বাগদাদ যান।
বাইতুল হিকমায় তার বিশেষ গুরুত্ব
ছিল। আব্বাসীয় বংশের
খলিফারা তাকে গ্রিক বিজ্ঞান ও
দর্শন গ্রন্থসমূহ আরবিতে অনুবাদের
দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মুসলিমরা এই
গ্রিক ও হেলেনীয় দর্শনকে "প্রাচীনের
দর্শন" নামে অভিহিত করতো।
প্রাচীনের দর্শন
নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে আল-
কিন্দি নিজস্ব দার্শনিক ও
বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রতিষ্ঠিত করেন।
এই জ্ঞানই
তাকে ইসলামী নীতিবিদ্যা থেকে অধ
িবিদ্যা এবং ইসলামী গণিত
থেকে ঔষধবিজ্ঞানের মত গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে মৌলিক গ্রন্থ ও ভাষ্য রচনায়
অনুপ্রাণিত করেছিল।
আল-কিন্দিই প্রথম ভারতীয়
সংখ্যা পদ্ধতিকে মুসলিম ও খ্রিস্টান
বিশ্বে পরিচিত করে তোলেন।
ক্রিপ্টোলজি ও
ক্রিপ্ট্যানালাইসিসে তার বিশেষ
আগ্রহ ছিল, গুপ্ত সংকেতের মর্ম
উদ্ধারের জন্য কয়েকটি নতুন গাণিতিক
পদ্ধতিও আবিষ্কার করেছিলেন যার
মধ্যে কম্পাঙ্ক বিশ্লেষণ
পদ্ধতি উল্লেখয়োগ্য। গণিত ও
চিকিৎসাবিজ্ঞানের
জ্ঞানকে ব্যবহার করে ডাক্তারদের
জন্য একটি স্কেল নির্ধারণ
করেছিলেন। এই স্কেল
দিয়ে ডাক্তাররা তাদের প্রস্তাবিত
ঔষুধের কার্যকারিতা পরিমাপ
করতে পারতো। এছাড়া তিনিই প্রথম
সঙ্গীত থেরাপি
পরীক্ষা করে দেখেছিলেন।
আল-কিন্দির দর্শনের প্রধান বিষয় চিল
মূলধারার ইসলামী ধর্মতত্ত্বের
সাথে সার সংযোগ। অনেক
ইসলামী চিন্তাবিদের মত তিনিও
ধর্মতত্ত্বের সাথে দর্শনের সম্পর্ক
নির্ণয়ের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্দির
অনেক রচনাতেই ধর্মতত্ত্বের মৌলিক
বিষয়ের দেখা মিলে। যেমন, আল্লাহ্র
প্রকৃতি, আত্মা এবং ভবিষ্যদ্বাণী।
মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের কাছে দর্শনের
গুরুত্ব তুলে ধরার ক্ষেত্রে তার কাজ
যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার নিজস্ব
দার্শনিক চিন্তায় মৌলিকত্ব খুব
বেশি ছিল না। আল-ফারাবি নামক
আরেকজন মুসলিম দার্শনিকের মতবাদ
তার দার্শনিক ধারাকে অনেকটাই
ম্লান করে দিয়েছে। তার উপর বর্তমান
যুগে পরীক্ষা করার মত তার খুব কম
লেখাই অবশিষ্ট আছে। তার পরও
কিন্দিকে আরব ইতিহাসের অন্যতম
সেরা দার্শনিকের মর্যাদা দেয়া হয়।
আর এ কারণেই
তাকে অনেকে সরাসরি "দ্য আরব
ফিলোসফার" নামে ডাকেন।[১]
দার্শনিক চিন্তাধারা
দার্শনিক প্রয়োগ পদ্ধতি বিষয়ে আল-
কিন্দির ধারণা বেশ মৌলিক।
তিনি নিছক ধ্যান বা অনুধ্যানের
মাধ্যমে দার্শনিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার
পক্ষে ছিলেন না। তিনি মনে করতেন,
সঠিক দার্শনিক
সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে হলে অবশ্যই
সুনির্দিষ্ট এবং নির্ভরযোগ্য জ্ঞানের
আশ্রয় নিতে হবে। এজন্যই
তিনি দর্শনে গাণিতিক
পদ্ধতি ব্যবহারের পক্ষপাতি ছিলেন।
কারণ সুনির্দিশ্ট তথ্য এবং যুক্তির
ভিত্তিতে কাজ করে। এদিক
দিয়ে তার সাথে আধুনিক দর্শনের জনক
রনে দেকার্তের মিল লক্ষ্য করা যায়।
দেকার্ত গণিতের মাধ্যমেই তার
মৌলিক সংশয়গুলো নিরসন করেছিলেন
এবং এর মাধ্যমেই তার চূড়ান্ত
দার্শনিক মতবাদ প্রতিষ্ঠিত
করেছিলেন। কিন্দির
মতবাদে দেকার্তের এই চিন্তাধারার
পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
জ্ঞানের
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কিন্দি তিনটি পৃ
থক বিষয় প্রবর্তন করেন: ইন্দ্রিয়, বুদ্ধি
এবং কল্পনা। তার মতে, ইন্দ্রিয়ের
মাধ্যমে আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন
করি আর বুদ্ধি প্রজ্ঞার জন্ম দেয়।
কিন্তু এ দুয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন
করে কল্পনা। আরেকটু
খোলাসা করে এভাবে বলা যায়,
ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে আমরা বিশেষের
অভিজ্ঞতা অর্জন করি এবং বুদ্ধির
মাধ্যমে সার্বিকের প্রজ্ঞা অর্জন
করি। কল্পনা এই বিশেষের
অভিজ্ঞতা ও সার্বিকের
প্রজ্ঞাকে সমন্বিত করে। এই মতবাদের
সাথে আবার ইমানুয়েল কান্টের
সমন্বয়বাদী জ্ঞানতত্ত্বের মিল আছে।
কান্ট বুদ্ধিবাদ এবং অভিজ্ঞতাবাদের
সমালোচনা করতে গিয়ে একটি সমন্বয়ক
আবিষ্কার করেন। এই সমন্বয়কের নাম
দেন সমীক্ষণবাদী বুদ্ধি। কান্টের ৯০০
বছর আগে কিন্দি অনেকটা এরকম তত্ত্বই
প্রচার করেছিলেন।
ভূমিকাতেই বলা হয়েছে কিন্দির
দর্শনে ধর্মতত্ত্বের একটি বড় স্থান
ছিল। কিন্দি সর্বশক্তিমান আল্লাহ-
কে বিশ্বাস করতেন। তার মতে,
জগতে কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। সকল
কার্যেরই একটি কারণ
আছে যাকে কার্যকারণ
বলা যেতে পারে।
সেক্ষেত্রে একটি মূল কারণ অবশ্যই
থাকতে হবে যা অন্য সবকিছুর কারণ,
কিন্তু যার নিজের কোন কারণ নেই।
অর্থাৎ সে সবকিছুর পরিচালক কিন্তু
নিজে কারও দ্বারা পরিচালিত নয়।
একেই কিন্দি আদিকারণ তথা আল্লাহ
বলেন। এর সাথে এরিস্টটলের যুক্তির
যথেষ্ট সাদৃশ্য আছে। কিন্দির মতে,
আল্লাহ জগতের স্রষ্টা, কিন্তু জগতের
কোন কাজে তিনি সরাসরি হস্তক্ষেপ
করেন না। বরং কতগুলো মাধ্যমের
সাহায্যে তিনি সবকিছু
পরিচালনা করেন। বিশ্বজগতের সকল
নিয়মের মূলে আছে এসব মাধ্যম
যা আগেই নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে।
আল্লাহ নিজেও এসব কার্যকারণ নিয়ম
লঙ্ঘন করেন না।
কিন্দির আত্মা বিষয়ক চিন্তায়
প্লেটোর সুস্পষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
তিনি মনে করতেন, আত্মা এবং জড়
সম্পূর্ণ পৃথক দুটি সত্তা। এর
মধ্যে আত্মাই উচ্চতর। আত্মা থেকেই সব
কাজের উৎপত্তি ঘটে, জড়ের কাজ
কেবল আত্মার নির্দেশ পালন করা।
ঈশ্বরকে তিনি আত্মসচেতন
আত্মা বলেছেন। এই মহান আত্মসচেতন
আত্মা এবং জড় জগতের
মাঝে বিশ্মাত্মা নামে একটি সত্তার
কল্পনা করেছেন। আর বলেছেন, এই
বিশ্মাত্মা থেকেই সৌরজগতের
সৃষ্টি হয়েছে। তার
মতে মানবাত্মা একটি বিশুদ্ধ উচ্চতর
সত্তা যা অনন্ত প্রত্যয়জগৎ
থেকে এসেছে। এ কারণেই ইন্দ্রিয় জগৎ
মানবাত্মার প্রয়োজন
মেটাতে পারে না। তাই আত্মার
প্রয়োজন মেটাতে হলে শাশ্বত
প্রজ্ঞা জগতের সাথে যোগাযোগ
স্থাপন করতে হবে। আত্মার সাথে এই
অনন্ত জগতের যোগাযোগের
ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আত্মার
চারটি স্তরের কথা বলেছেন। এর
মধ্যে সবচেয়ে উত্তম স্তরটি বহিরাগত।
আল্লাহ্র ইচ্ছায় অনন্ত জগৎ
থেকে তা বিকিরণের
মাধ্যমে বহিরাগত স্তরে প্রবেশ
করেছে।
বোঝা গেল,
কিন্দি প্রজ্ঞা জগৎকে বলেছেন অনন্ত
আর মানবাত্মাকে বলেছেন বুদ্ধি জগৎ
যা অনন্তের সাথে সম্পর্কিত। আত্মার
বুদ্ধিকে চারটি স্তরে ভাগ করেছেন।
এই ভাগগুলো হচ্ছে: সুপ্ত বুদ্ধি, সক্রিয়
বুদ্ধি, অর্জিত বুদ্ধি এবং চালক বুদ্ধি।
সুপ্ত বুদ্ধি বলতে আত্মার বিচার-
বিশ্লেষণ ক্ষমতাকে বুঝিয়েছেন।
যেমন, লিখতে জানেন এমন কোন
ব্যক্তির লেখার ক্ষমতা তার সুপ্ত
শক্তি। কারণ তার লেখার
ক্ষমতা আছে এবং চাইলেই তার প্রয়োগ
ঘটাতে পারেন। সক্রিয়
বুদ্ধি হচ্ছে আত্মার প্রকৃত অভ্যাস।
যেমন লেখার ক্ষমতা যার
আছে সে লিখতে থাকলেই
তাকে সক্রিয় বুদ্ধি বলা যায়। অর্জিত
বুদ্ধি হচ্ছে কোন জ্ঞানের
প্রয়োগে যতটুকু বুদ্ধি ব্যবহৃত হয় তার
পরিমাপ। মানুষ নিজের চেষ্টায় এই
বুদ্ধি অর্জন করে বলেই এমন নাম
দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, লেখার সময়
সে বুদ্ধির কতটুকু ব্যবহার করবে তা তার
নিজেরই বের ঠিক করতে হয়। চালক
বুদ্ধি হচ্ছে চূড়ান্ত এবং জাগতিক
সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এটা এক ধরনের
আধ্যাত্মিক উৎস। আগেই বলা হয়েছে,
আল্লাহ্ এই বুদ্ধি বিকিরণের
মাধ্যমে মানবাত্মায় প্রবেশ
করিয়ে দিয়েছেন
বলে কিন্দি বিশ্বাস করতেন। আত্মার
এই সর্বোচ্চ স্তরটি দেহনিরপেক্ষ
এবং অবিনশ্বর।
তবে পরিশেষে কিন্দি বলেন,
প্রকৃতপক্ষে সবগুলো স্তরই একটি স্বর্গীয়
মহান সত্তা কর্তৃক পরিচালিত হয়। এই
স্বর্গীয় সত্ত্বাই সকল সৈতিক ও
আধ্যাত্মিক প্রগতির ভিত্তি।


সূত্রঃ উইকিপিডিয়া 

No comments:

Post a Comment