-------------------------
মুসলিম শাসন
**************
১৩৩৮ সাল
থেকে বাংলা দেশে মুসলিম
শাসনের শুরু হয়। ফকরুদ্দিন মুবারক
শাহপুর্ব বাংলার
সোনারগাঁ তে নিজেকে দিল্লীর
সুলতান দের
থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন
বলে ঘোষনা করেন। আর প্রায় দুশ বছর
বাদে ১৫৭৬ সালে বাংলা দেশ মুঘল
সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
সোনারগাঁও সম্বন্ধে এখানে কিছু
বলে নি। দেব বংশীয়
রাজা দনুজমাধব দশরথ দেব, সেন
বংশের রাজাকে পরাস্ত
করে বিক্রমপুর থেকে তার
রাজধানী তুলে ত্রয়োদশ শতাব্দীর
মাঝামাঝি সোনারগাঁওতে নিয়ে আসেন।
কিন্তু সামশুদ্দিন ফিরোজ শাহের
আক্রমণে পরাজিত
হলে সোনারগাওতে মুসলিম শাসনের
শুরু হয়। যদিও এর
আগে সুফি সন্তেরা সোনারগাওতে এসে তাদের
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ফিরোজ শাহের মৃত্যুর পরে তার
ছেলে গিয়াসুদ্দিন বাহাদুর শাহ
১৩২২ খৃষ্টাব্দে সুলতান হলে দিল্লির
সুলতান গিয়াসুদ্দিন তুঘলক
তাঁকে যুদ্ধে পরাজিত
করে বন্দি করেন। কিতু গিয়াসুদ্দিন
তুঘলকের মৃত্যু হলে তার ছেলে মহম্মদ
বিন তুঘলক সুলতান হন এবং বাহাদুর
শাহকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে সোনারগাঁও
র গভর্ণর হিসাবে নিযুক্ত করেন।
চার বছর গভর্ণর হিসাবে শাসন করার
পরে বাহাদুর শাহ ১৩২৮
খৃষ্টাব্দে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সুলতান
মহম্মদ বিন তুঘলক তার
সেনাপতি বাহরাম খান কে পাঠান
বিদ্রোহ দমন করতে, বাহাদুর শাহের
সাথে যুদ্ধে পরাজয় ঘটে এবং তার
মৃত্যু হয়। বাহরাম খান সোনারগাঁও এর
গভর্নর নিযুক্ত হন।
১৩৩৮ খৃষ্টাব্দে বাহরাম শাহের মৃত্যু
হলে তার অঙ্গরক্ষক ফকরুদ্দিন মুবারক
শাহ নিজেকে সোনারগাঁর স্বাধীন
সুলতান বলে ঘোষনা করেন। সেই সময়
লাখনউটি বা গৌড়ে হাজী ইলিয়াস
মুঘলদের হয়ে সুলতান হিসাবে শাসন
করছিলেন। ১৩৪২ খৃষ্টাব্দে ফকরুদ্দিন
শাহের মৃত্যু হলে তার পুত্র
ইখতিয়ারউদ্দিন গাজী শাহ সুলতান
হন। এর তিন বছর বাদে গৌড়ের
সুলতান ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁও
আক্রমণ করেন এবং সোনারগাঁও জয়
করেন। তিনি সাতগাও(সপ্তগ্রাম),
সোনারগাঁও এবং গৌড়
(লাখনাখৌটি বা লক্ষনাবতী) এক
করে সমগ্র বাংলার সুলতান
হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
১৪৩৫ খৃষ্টাব্দে শামসুদ্দিন আহমদ
শাহের মৃত্যু
হলে সভাসদেরা নাসিরুদ্দিনকে সিংহাসনে বসান।
নাসিরুদ্দিন নিজে নাসিরুদ্দিন
মহম্মদ শাহ নাম নিয়ে সুলতান
হিসাবে রাজত্ব করতে থাকেন।
ইলিয়াস শাহী বংশের
মধ্যে আমরা রাজা গণেশের কিছু
অংশ পাই। ১৪১৫ থেকে ১৪৩৫
খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজা গণেশের শাসন
ছিল। রাজা গণেশ দিনাজপুরের
গভর্ণর, এবং ভাতুরিয়ার এক জমিদার
ছিলেন। কারুর মতে রাজা গণেশ
গিয়াসউদ্দিন মহম্মদ আজম শাহ
কে হত্যা করেন, কিন্তু অন্যদের
মতে গিয়াসউদ্দিন শাহের মৃত্যু
সাধারণ ভাবেই হয়েছিল।
গিয়াসুদ্দিনের মৃত্যুর পরে তার পুত্র
সইফুদ্দিন হামজা শাহ দু বছর রাজত্ব
করার পরে শিহাবুদ্দিন বায়াজিদ
শাহসুলতান হন। কারুর
মতে রাজা গণেশের
কাছে শিহাবুদ্দিনের মৃত্যু হয় আবার
কারুর মতে শিহাবুদ্দিনের পুত্র
আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহের মৃত্যু হয়।
যাই হোক না কেন এই মৃত্যুর
ফলে ইলিয়াস শাহী বংশের
বদলে রাজা গনেশের হিন্দু রাজত্ব
স্থাপিত হয়।
রাজা গণেশের রাজত্বের সময়
ঐতিহাসিক ফিরিস্তার মতে হিন্দু
মুসলিম সম্প্রীতি ছিল, যদিও
ঐতিহাসিক রিয়াজের মতে গৌড়
বা পান্ডুয়ার মুসলিমদের উপর
অত্যাচার হয়েছিল। শেখ নুর কুতব উল
আলম এক চিঠি লিখে জৌনপুরের
সুলতান ইব্রাহিম শাহ
সারকি কে বাংলা দেশ আক্রমণ
করতে ডেকে পাঠান।
মুল্লা তাকিয়ার মতে ইব্রাহিম শাহ
যখন রাজা গণেশকে শিক্ষা দেবার
জন্য অগ্রসর হন তখন মিথিলার
রাজা শিবসিংহএর
কাছে বাধা পান।
ইব্রাহিম শাহের আক্রমণ
সম্বন্ধে নানান মত আছে। কেউ বলেন
যে ইব্রাহিম শাহের মুল লক্ষ্য ছিল
বাংলাদেশের পুর্ব দিকে কোন
রাষ্ট্র। আবার আব্দুর রজ্জক
সমরখন্ডীর মতে হেরাতের তিমুরিদ
বংশীয় সুলতান শাহরুখের
(মতান্তরে তিমুরের পুত্র) কাছ
থেকে ইব্রাহিম শাহ এই
মর্মে নির্দেশ পান যে বাংলা দেশ
আক্রান্ত হলে হেরাতের সুলতান
শাহরুখ বাংলা দেশকে সাহায্য
করবেন। যার ফলে ইব্রাহিম শাহ
রাজা গণেশের বিরুদ্ধে আর অগ্রসর
হতে সাহস পান নি। মুল
ফারসী ভাষায় লেখা চিঠিতার
সারাংশ এখানে দেবার লোভ
সামলাতে পারলাম না।
ফরমানে লেখা হয়েছিল, “আমার এই
ফরমান তোমার হাতে পৌঁছানর এক
দিনের মধ্যে তুমি যে সমস্ত গৌড় এর
মুসলমান নাগরিকদের
বন্দী বানিয়েছ তাদের
সসন্মানে নিজের নিজের
ঘরে পৌঁছে দেবার বন্দোবস্ত করবে,
এবং তাদের ক্ষতির
সমূচিতভাবে ক্ষতি পুরন করবে। এ
কথার অন্যথা হলে আমি কাবুলের
রাজাকে তার সমস্ত সঙ্গীদের
নিয়ে তোমাকে আক্রমণ
করতে আদেশ দেব। এতেও
তুমি যদি না বুঝতে চাও তবে সমস্ত
মধ্য প্রাচ্যের (জায়গাগুলোর নাম
করে) রাজ্য গুলিতে যারা শাসন
করছে তাদের আদেশ দেব
যে তোমাকে তারা গিয়ে যেন
উচিত শাস্তি দেন। এতেও
যদি না মানবার
ইচ্ছে থাকে তবে সুদূর তুর্কিস্থানের
রাজাকেও বলব সে যেন
তোমাকে হত্যা করার বন্দোবস্ত
করেন। তাতে যদি তোমার
সদবুদ্ধি না জাগে তবে আমাদের
সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধাদের
পাঠাব
তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাক
দিয়ে মাংস খাওয়াতে।“আমার
ভাষাতে তেমন জোর নেই, কিন্তু
চিঠিটা এতই কাজ দিয়েছিল
সে ইব্রাহিম শারকী তৎক্ষণাৎ পেছন
ফেরেন। গৌড়ে আর আক্রমণ হয় না।
কিন্তু রাজা গণেশ ইব্রাহিম শাহের
আক্রমণের ভয়ে শেখ নুর কুতব উল
আলমের কাছে ভরসা চাইলে,
তিনি রাজা গনেশের পুত্র
যদুকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন।
যদু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ
করে জালালুদ্দিন মহম্মদ শাহ
নামে শাসন করতে শুরু করেন। কিন্তু
ইব্রাহিম শাহ জৌনপুরে ফেরত
গেলেই আবার রাজা গণেশ
সিংহাসনে বসেন।পরে যদুর কিছু
ভৃত্যের হাতে রাজা গণেশের মৃত্য
হয়, যদু আবার জালালুদ্দিন
নামে শাসন শুরু করেন।
শ্রী যদুনাথ সরকারের
মতে রাজা গনেশ দনুজমর্দনদেব
নামেও পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুর
পরে তার দ্বিতীয় পুত্র মহেন্দ্রদেব
নামে সিংহাসনে বসেন।
পরে গণেশের প্রথম পুত্র
জালালুদ্দিন সুলতান হয়ে বসেন।
কিন্তু ঐতিহাসিক নলিনীকান্ত
ভট্টশালীর মতে গণেশের মৃত্যর
পরে জালাউদ্দিন আবার হিন্দু
ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মহেন্দ্রদেব
নামে শাসন শুরু করেন।
এবং পরে আবার জালালুদ্দিন
নামে শাসন করেন। জালালুদ্দিন
মহম্মদ শাহের পরে ছ জন পর পর
সুলতান হন। শেষ ইলিয়াস
শাহী বংশের সুলতান ছিলেন
জালালুদ্দিন ফতেহ শাহ। যদিও তার
সাম্রাজ্য পুর্বে শ্রীহট্ট
থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে দামোদর নদ
পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল তবুও ১৪৮৭
খৃষ্টাব্দে তার এক
হাবসী সেনাধ্যক্ষের হাতে তার
মৃত্যু হয়।
হাবসী সেনাধ্যক্ষ
শাহজাদা বারবাক নাম
নিয়ে সুলতান হন।কিন্তুআর একজন
হাবসী সেনাধ্যক্ষ সইফুদ্দিন ফিরোজ
শাহের হাতে সুলতান বারবাকের
মৃত্যু ঘটে। সইফুদ্দিন সুলতান
হিসাবে রাজত্ব শুরু করেন। ১৪৯৪
খৃষ্টাব্দেহাবসি বংশের শেষ সুলতান
শামসুদ্দিন মুজাফফর শাহ তার
ওয়াজির সৈয়দ হুসেনের
হাতে মারা যান। সৈয়দ হুসেন
নিজে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ নাম
নিয়ে সুলতান হয়ে হুসেন
শাহী বংশের পত্তন করেন।
আলাউদ্দিন হুসেন শাহ কে বাংলার
সুলতানদের মধ্য সর্বোচ্চ স্থান
দেওয়া হয়। তার রাজ্য কামরূপ
(বর্তমান পূর্ব আসাম),
কামতা (বর্তমান কোচবিহার
এলাকা, খেন রাজ বশের শেষ
রাজা মীলাম্বর কে হারিয়ে)),
জাজনগর (ওড়িষ্যার পূর্ব দিকের
অংশ)এবং ওড়িষ্যা পর্সন্ত বিস্তৃত
ছিল।কিন্তু ভুইয়াদের
আক্রমনে আবার ১৫০৫ খৃষ্টাব্দের
কোচ বংশেরশাসনেরপুনরায় আগমন
ঘটে। আলাউদ্দিন হুসেন শাহ এর
পরে সুলতান হন নাসিরুদ্দিন নসরত
শাহ এবং তার পরে মাহমুদ শাহ।
নাসিরুদ্দিন নসরত শাহ তার শাসন
কালে বাবরের আক্রমন
থেকে আফগান নৃপতিদের আশ্রয়
দেন। কিন্তু নাসিরুদ্দিন শাহ বাবর
এবং আফগান লড়াইএ নিরপেক্ষ
অবস্থান নিয়েছিলেন।১৫৩৮
খৃষ্টাব্দে আফগান দের হাতে হুসেন
শাহী বংশের পরাজয়
ঘটে এবং বাংলা দেশে আফগান
শাসনের প্রতিষ্ঠা হয় । ১৫৩৯
খৃষ্টাব্দে চৌষার যুদ্ধে শের শাহের
হাতে হুমায়ুনের পরাজয়
হলে বাংলা দেশে আফগান শাসন
পুর্ণ ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়,এই আফগান
বংশা কাররানী বংশ
নামে পরিচিত ছিল।
শের শাহের মৃত্যুর পরে এই
কাররানী বংশের সুলতানেরা মুঘল
সম্রাট আকবরের অধীনতা স্বীকার
করে নেন। আর ১৫৭৪ খৃষ্টাব্দে সম্রাট
আকবর শেষ কাররানী সুলতান দাউদ
কাররানীকে হারিয়ে দিয়ে সমগ্র
বাংলাদেশকে মুঘল সাম্রাজ্যের
অন্তর্গত করেন। এই সময় মুনিম খান
রাজধানী গৌড়
থেকে টান্ডাতে নিয়ে যান।১৫৭৫
খৃষ্টাব্দে মুনিম খান
এবং রাজা টোডরমল্ল এর যুগ্ম
প্রচেষ্টায় বাংলাতে পুর্ণ মুঘল
অধিকার প্রতিষ্টা হয়।
যদিও বাংলাতে মুঘল সাম্রাজ্যের
প্রতিষ্ঠার
কথা এখানে বলা হচ্ছে তবুও ঐ সময়
আফগান সুলতান শাহীর যে সমস্ত
গভর্ণর ছিলেন তারা মুঘল শাসনের
বিরুদ্ধে লড়াইকরতে থাকে। এদের
মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম ছিল
ঈশা খান, প্রতাপাদিত্য, কেদার
রায় এবং কন্দর্পনারায়নের ।
ঈশাখান মুঘল দের খাজনা দিলেও
কার্যত স্বাধীন ছিলেন,
অন্যেরা নিজ নিজ
জায়গাতে স্বাধীন ভাবেই শাসন
করছিলেন। এই
দলপতিরা বারো ভুইয়া নামেও
পরিচিত ছিলেন।
১৫৯৪ খৃষ্টাব্দে রাজা মান সিংহ
বারো ভুইয়াদের দমন
করতে এলে ঈশাখানের
সাথে যুদ্ধে(১৫৯৭ খৃষ্টাব্দ)
তিনি হেরে যান। রাজ মান সিংহ
ঈশা খানের মৃত্যুর পরে তার পুত্র
দাউদ খান
কে ভাটী এলাকা থেকে সোনারগাওতে তাড়িয়ে দেন।
কেদার রায়কে হত্যা করা হয়।
আকবরের মৃত্যুর পরে জাহাঙ্গীর
বাংলার গভর্ণর হিসাবে ইসলাম
খান চিস্তিকে নিযুক্ত
করলে তিনি১৬০৮
খৃষ্টাব্দে এসে গৌড় থেকে তার
রাজধানী ঢাকাতে সরিয়ে নিয়ে আসেন।
ঢাকার নতুন নাম দেওয়া হয়
জাহাঙ্গীরাবাদ।কিন্তু সাধারণ
জনতা এই নতুন নাম পছন্দ করেন না,
সাধারণ ভাবে ঢাকা নাম
থেকে যায়। ইসলাম খানযশোহরের
প্রতাপাদিত্যকে পরাস্ত করেন,
এবং ঈশাখানের অন্য পুত্রকেও
পরাস্ত করে বন্দী করেন।
বারো ভুইয়ারা একে একে সব পরাস্ত
হয়ে মুঘল সাম্রাজ্যের
বশ্যতা স্বীকার করে নেয়।
বাংলা দেশের তদানীন্তন গরিমার
প্রকাশে এই নবাবদের অবদান প্রচুর।
১৬৫৭ খৃষ্টাব্দে লাহোরের সংগ্রাম
রাই যিনি মুঘলদের এক জন
কর্মচারী ছিলে বর্ধমান এলাকার
রাজা হিসাবে মুঘলদের কাছ
থেকে ফরমান পান। তার রাজত্বের
ক্রমশ বিস্তার ঘটে এবং বিষ্ণুপুরের
মল্ল বংশের উপর
আক্রমনে বিজয়ী হন।
ইসলাম খান চিস্তির পরে ১৭১৩
খৃশ্তাব্দে বাংলা গভর্ণর হয়ে আসেন
মুর্শিদ কুলী খান। ছ বিছ্রের
মধ্যে তাঁকে অড়িষ্যার দিওয়াআন
নিযুক্ত করা হয়। তিনি এসে তার
রাজধানী ঢাকা থেকে সরিয়ে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যান।
তখনকার দিনে মুর্শিদ কুলি খান
এবং সুজা খান মুঘল
সম্রাটকে বার্ষিক
খাজনা হিসাবে এক
কোটী টাকা দিতেন।
১৭২৭ খৃষ্টাব্দে মুর্শিদ কুলী খানের
মৃত্যুর পরেতার পুত্র সুজাউদ্দিন
বাঙ্গলা বিহার এবং অড়িষ্যার
দিওয়ান নুক্ত হন। বাংলা দেশের
রাজনৈতিক অশান্তি এলে সেই
সুযোগে নাগপুরের
মারাঠা মহারাজা রঘুজী ওড়িষ্যার
সাথে বাংলা দেশের কিছু অংশ
দখল করেন।কিন্তু কিছুদিনের
মধ্যে মারাঠাদের বাংলা দেশ
থেকে বিতারন করা হয়। এই
মারাঠেদের বর্গী নামেও অভিহিত
করা হয়েছে।
১৭৪০ খৃষ্টাব্দে পাটনার এক
তুর্কিস্তানী সিপাহী,
আলিবর্দী খান সুজাউদ্দিনের পুত্র
সরফরাজ
খানকে হত্যা করে মুর্শিদাবাদের
নবাব
হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
১৭৫৬ খৃষ্টাব্দে আলিবর্দিখানের
পৌত্র সিরাজউদ্দৌল্লা নবাব হন
কিন্তু আমিনচাদ বা উমিচাদ
এবং মীর জাফরের
বিশ্বাসঘাতকতার ফলে পলাশির
যুদ্ধে সিরাজের পরাজয় হয়,
বাংলা দেশে ইংরেজ শাসনের
সুত্রপাত হয়।
সিরাজউদ্দৌল্লার মৃত্যুর পরে মীর
জাফর তার বিশ্বাসঘাতকতার
পুরস্কার হিসাবে বাংলা দেশের
মসনদে বসেন। অবশ্যি প্রতিদাব
হিসাবে মীরজাফর বর্তমাণ ২৪
পরগণা এলাকা বৃটিশদের দান করেন।
সাথে উপঢৌকন হিসাবেপ্রচুর ধনরত্ন
ও দেওয়া হয়। ফলে মীর জাফরের
আর্থিক
ক্ষমতাকমে এলে বৃটিশেরা তার
জামাই মীর কাশিমকে বাংলার
মসনদে বসান। প্রতিদান
হিসাবে তিনি বৃটিশদের
মেদিনীপুর, বর্ধমান এবং চট্টগ্রাম
এলাকা দান করেন।ব্রিটিশদের চাপ
মীর কাশিমের উপর ক্রমাগত
বাড়তে থাকায় মীর কাশিম তার
রাজধানী সরিয়ে মুঙ্গেরে নিয়ে যান।
এবং বৃটিশদের দেওয়া সমস্ত
বানিজ্যিক অধিকার বন্ধ করে দেন।
বৃটিশেরা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
ঘোষনা করে এবং পাটনা অধিকার
করে। মিরকাশিম পাটনা পুনরায়
অধিকার করলেও পরে বৃটিশদের
সাথে ঘরিয়া,
উরানওয়ালা এবং মুঙ্গেরের
যুদ্ধে মীরকাশিমের পরাজয় হয়। মীর
কাশিম
পালিয়ে গিয়ে অযোদ্ধাতে আশ্রয়
নেন।১৭৬৪ খৃষ্টাব্দেরঅযোদ্ধার
নবাব সুজাউদ্দৌল্লা, বাংলার নবাব
মীর কাশিম এবং মুঘল
বাদশা দ্বিতীয় শাহ আলমের
সাথে বৃটিশদের বক্সারের
যুদ্ধে বৃটিশেরা জয়ী হন।
ফলে বাংলা দেশে যেটুকু
নবাবী শাসন ছিল তার অবসান হয়
এবং ইংরেজ
www.facebook.com/swopnonil
No comments:
Post a Comment